ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গ্রেফতার তার সহকারী তুহিন সিদ্দিকী অমিসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় মামলাটি করেন সাভার থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি শিকদার মো. শামীম হোসেন। বুধবার বেলা ১২ টায় তিনি টেলিফোনে বলেন, অমির অফিস থেকে ১০২ টি পাসপোর্ট উদ্ধারের ঘটনায় দক্ষিণখান থানায় এ মামলা হয়েছে। মামলায় ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তারা হলেন-তুহিন সিদ্দিকী অমি, বাছির ও মশিউর। অমি পরীমনিকে হত্যা ও ধর্ষণচেষ্টা মামলারও আসামি। মঙ্গলবার তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আইনশৃংখলা বাহিনী জানিয়েছে, নায়িকা পরীমনিকে ফাঁদে ফেলতে অমিই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
গ্রেফতার হওয়ার পর অমিকে নিয়ে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। ক্লাবপাড়ায় অমিও একজন পরিচিত মুখ। তার বাবা তোফাজ্জল হোসেন এক সময় বিদেশে ছোটখাটো চাকরি করতেন। এরপর দেশে ফিরে ব্যবসা শুরু করেন।
তবে সংসারে ভাগ্য ফিরে যখন ছেলে অমি আশকোনায় তাদের সিঙ্গাপুর ট্রেনিং সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠানের হাল ধরেন। এখান থেকেই ১০২ টি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানের আড়ালে নারী পাচার করেই প্রচুর অর্থ কামান তারা।
বিত্তশালী ও তাদের বখে যাওয়া সন্তানদের বিপথে নিতে অমির জুড়ি নেই। ঢাকার উত্তরা ও আশকোনায় তাদের একাধিক বাড়ি ও প্লট রয়েছে। ওই এলাকায় এক নামে তাকে সবাই চেনেন। শত শত কর্মী বিদেশে পাঠিয়ে ও প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকার মালিক হন অমি।
বিদেশে কর্মী পাঠানোর সূত্র ধরে সাবেক এমপি কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের সঙ্গে অমির পরিবারের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।
অমিদের একাধিক আলিশান বাড়িতে রয়েছে সুইমিংপুলও। তাদের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ। সেখানে অনেক সম্পদ গড়েছেন। মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোমও গড়েছেন অমি। দক্ষিণখানে একটি রিসোর্টের আড়ালে প্রায় প্রতিদিন মদ-জুয়ার আসর বসাতেন তিনি। ওই রিসোর্ট তার ‘রঙশালা’ নামে পরিচিত।
সূত্রে আরও জানা গেছে, নাসির ও অমির সিন্ডিকেট আগেও অনেক নারীর ওপর একই ধরনের নিপীড়ন চালিয়েছে। তবে নানা ভয়-ভীতি ও প্রলোভন দিয়ে তাদের মুখ বন্ধ রাখা হয়।
এবারও তাদের বিশ্বাস ছিল, পরীমনির ঘটনা তারা ধামাচাপা দিতে পারবেন।অবশেষে পরীমনিকাণ্ডে তাদের দীর্ঘদিনের কুকর্ম সামনে এলো। প্রসঙ্গত, ৯ জুন মধ্যরাতে সাভারে অবস্থিত ঢাকা বোট ক্লাবে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন।
ঘটনার চার দিন পর রোববার রাত ৮টার দিকে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে এবং রাত ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘটনা প্রকাশ করেন নায়িকা পরীমনি। সোমবার সকালে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন তিনি।
ওই দিনই প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে মাদক ও ইয়াবা জব্দ করা হয়।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।